অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত-র লেখায় মহাকবি গ্যোয়েটের একটা লাইন পেয়েছি, 'Entbehren sollst du, sollst entbehren' - বাইরের যখন সমস্ত বিরল তখনি নিজেকে ভালোরকম পাই।
বাইরে বৃষ্টি পড়ছে। শীতকালের কলকাতা যেন আরো নিঝুম হয়ে এসেছে। আমাদের দ্বিধাদীর্ণ জীবনে নিজেকে পাওয়ার প্রশ্নটা প্রচ্ছন্ন থেকে যায়। বাইরে তো প্রচণ্ড কোলাহল। ভাবছি যে এখন করার মত কাজ দেড়শোটা আছে। যদি কিছুই না করি? কিছুক্ষণ অলোকরঞ্জন, গ্যোয়েটে, রবীন্দ্রনাথ থাকুন মুখোমুখি। কেমন হয় যদি 'বাহির'-কে বিরল করে দিই?
‘চিন্তা' তার শাখা প্রশাখা ক্রমশঃ বড় করছে। কত প্রতিভাবান ছেলেমেয়ে পড়ছে, পড়াচ্ছে। আমাদের রিসার্চ গ্রুপ গুলো কাজ করতে শুরু করেছে। গ্রামাঞ্চলে একাধিক ম্যাথ সার্কেল চলছে পুর্ব ইউরোপের ধাঁচে। এ সবের সাথে বাইরে প্রচন্ড কোলাহল। মানুষের শিখতে চাওয়ার, জানতে চাওয়ার অন্তর্বস্তুতে যে একাকীত্ত্ব আছে তার থেকে হয়ত আমরা ক্রমশঃ সরে আসছি।
রাসেল বলেছিলেন 'কসমিক লোনলিনেস'। মানুষ যখন 'জানে' অথবা ঠিক যে মুহুর্তে তার 'জানতে পেরেছি' অনুভুতি হয়, সে মুহুর্তে সে কি দুরন্ত ভাবেই না একা। এক বিরল বাহিরে সে হঠাৎ-ই নিজের মুখোমুখি হয়। সেই মুহুর্তে তার সেই ভীষণ রকম একা হয়ে যাওয়াকে আমরা আমাদের পড়া-শেখার কারখানায় যথোচিত সম্মান দিই না। অথচ প্রকৃত শিক্ষণ সেই চূড়ান্ত একাকিত্ত্বের, সেই অসহ্য আনন্দের প্রস্তুতি বই তো কিছু নয়।
রবীন্দ্রনাথের 'অতিথি'কে আমাদের দেওয়ার কিছু নেই। এখনো নয়।